দুর্নীতিগ্রস্ত আওমীলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়ালেও সুবিধাভোগী নব্য আওয়ামীলীগ ও বদি’র অঘোষিত পিএস দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি উখিয়ার মিলন বড়ুয়ার বিচরণ বহাল তবিয়াতে রয়েছে।
আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির একান্ত পিএস উখিয়ার মিলন বড়ুয়া ক্ষমতার জোর কাটিয়ে বনের জায়গা জবরদখল করে দালান নির্মাণ, অবৈধ উপায়ে দুই ফিটারের দুইটি বিদ্যুৎ সংযোগ সুবিধা, দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ, এমপির ডিও লেটার বাণিজ্য, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষ লেনদেন, পাতাবাড়ি ভোট কেন্দ্রে জোরপূর্বক নৌকার পক্ষে ভোট আদায়সহ বিভিন্ন অনৈতিক অপকর্ম চালিয়ে সম্প্রতি বেশ আলোচনায় আসেন তিনি।
আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বদি’কে ব্যবহার করে কোন বাধা বিঘ্ন ছাড়া বনের জায়গা জবরদখল নিয়ে উখিয়ার মুহরীপাড়া ও পাতাবাড়িতে প্রায় ২ একর বনভূমিতে গড়ে তুলেন অবৈধ স্থাপনা। তার এসব অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে মুখ খুলেনি উখিয়ার বনবিভাগ। বদি’ ক্ষমতার প্রভাব কাটিয়ে চুপ রেখেছিলেন সব কিছু।
সেইসব নির্মিত অবৈধ স্থাপনায় সজ্জিত করবার জন্য উলটো পেয়েছেন দুই ফিটার থেকে দুইটি বিদ্যুৎ সংযোগ।
বন অধিদপ্তর থেকে স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে বনের জায়গায় কোন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া যাবে না। তারপরও ক্ষমতা আর টাকার জোরে তিনি পেয়ে যান অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ।
উখিয়া পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম কাইজার নুরের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সংযোগস্থলে পল্লীবিদ্যুৎ টিম পাঠানোর ব্যবস্থা করতেছি । দুই লাইন থেকে দুইটি বিদ্যুৎ সংযোগ যদি ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বনের জায়গা জবরদখল ও বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার বিষয়ে উখিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার ( ভারপ্রাপ্ত) শাহীনুল ইসলাম বনের জায়গায় অবৈধ উপায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ও জবর দখলের বিষয়টি তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
জানা যায়, আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এমপি বদির সাথে তার গভীর সম্পর্ক থাকায় তিনি বিভিন্ন সুপারিশ বাণিজ্যে ও অবৈধ উপায়ে আয় করেছেন কোটি কোটি টাকা।
এমপির ডিও লেটার ঘুষের লাইসেন্স হিসাবে ব্যবহার করেছেন বড় বড় প্রকল্প ও নিয়োগ বাণিজ্যে। এমন তথ্যে খোজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে আবেদন করা এক প্রার্থী এমপির ডিও লেটারের জন্য গেলে ৩ লাখ টাকার কমে ডিও লেটার না দিয়ে ফিরিয়ে দেন। পরে এক ছাত্রলীগ কর্মীর কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নিয়ে ডিও লেটার দিয়ে তার চাকরি কনফার্ম করেন মিলন বড়ুয়া।
উখিয়া পাতাবাড়ির করিম নামে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, মিলন বড়ুয়া বদি’র ক্ষমতা ব্যবহার করে গত জাতীয় নির্বাচনে পাতাবাড়ি ভোট কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে দেখে দেখে ভোট নিয়েছেন। নৌকার বিপক্ষে যারা ছিল বা সন্দেহজনক ব্যক্তিকে নৌকা মার্কায় সীল মেরে মিলন বড়ুয়াকে দেখিয়ে যেতে হতো। এমন কি আমার বাবা মা ভোট দিতে গিয়ে স্বাধীন ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি মিলন বড়ুয়ার কারণে। পরে তারা ভোট না দিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে চলে আসতে হয়। পরে শুনা যায় আমার বাবার ভোট দিয়ে দিয়েছেন এই মিলন বড়ুয়া।
এই মিলন বড়ুয়া বদির’র ক্ষমতাকে ব্যবহার করে দুইটি প্রতিষ্ঠানে চাকরিও করতেন। উখিয়া এবং টেকনাফ দুই উপজলার প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন ভাতা ভোগ করেছে নিয়মবহির্ভূত ভাবে। আওয়ামীলীগের অনেক নিরহ মানুষের জন্য গনহারে মামলা হয়েছে। অথচ বেচে গেছেন বড় বড় দুর্নীতিবাজ রাঘববোয়ালরা। এলাকা ছাড়া হয়েছে আওয়ামীলীগের প্রকৃত নেতারা। যারা কোন ধরণের দুর্নীতিতে জড়িত ছিল না। অথচ যারা দুর্নীতি অনিয়ম করে মানুষকে অন্যায় জুলুম করেছে তারা টাকার জোরে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতেছে। এটাই আমাদের দেশের রাজনীতি।
এসব ঘটনার সত্যতা জানতে অভিযুক্ত মিলন বড়ুয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করেন বনের জায়গায় দুইটি বিদ্যুৎ সংযোগের কথা।
তিনি দাবি করেন, ৫৪ হাজার টাকা দিয়ে ২ টি খুটি এনে তার বাড়িতে লাইন বসিয়েছে। বনের জায়গায় অনেকের বিদ্যুৎ লাইন আছে কাটলে সবাইর কাটতে হবে।
পাঠকের মতামত